রহমত নিউজ ডেস্ক 27 February, 2023 09:21 PM
যশোরে মহিলা আওয়ামী লীগের ৫৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংগঠনটি জেলার সভাপতি লাইজু জামান ও সাধারণ সম্পাদক জ্যোৎস্না আরা মিলির সমর্থকদের মধ্যে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। এতে অনুষ্ঠান প্রায় আধাঘণ্টা বন্ধ থাকলেও পরবর্তীকালে একই স্থানে দুই পক্ষই পৃথকভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটার মধ্যে দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেছে। তবে দলীয় কার্যালয়ে হাতাহাতি ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটলেও দুই গ্রুপের নেতারাই বলছেন, ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। একইভাবে সুষ্ঠুভাবে কর্মসূচি শেষ করা হয়েছে।
জানা গেছে, যশোর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যত দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি এবং অপরটি সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। দলের এই বিভক্তির কারণে কার্যত জেলার সব সহযোগী সংগঠনের মতো মহিলা আওয়ামী লীগও দুই গ্রুপে বিভক্ত। মহিলা আওয়ামী লীগের একটি অংশের নেতৃত্ব দেন সভাপতি লাইজু জামান এবং অন্যটির সাধারণ সম্পাদক জ্যোৎস্না আরা মিলি। লাইজু কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারী ও মিলি শাহীন চাকলাদারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
মহিলা আওয়ামী লীগের ৫৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার সকাল থেকেই নানা কর্মসূচি হাতে নেয় যশোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ। দলের দ্বন্দ্ব-বিভক্তির কারণে দুটি গ্রুপই সকাল থেকেই যার যার অনুসারীদের নিয়ে শোভাযাত্রা ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা জানায়। দুপুরে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনাসভা ও কেক কাটার আয়োজন ছিল। অনুষ্ঠান শুরুর আগে নেতাকর্মীদের নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে হাজির হন সভাপতি লাইজু জামান। এর পরেই অনুসারীদের নিয়ে উপস্থিত হন সাধারণ সম্পাদক জোৎস্না আরা মিলি। এর আগেই লাইজুর সমর্থকরা সামনের সারির চেয়ারগুলোতে বসে পড়েন। পরে মিলির সমর্থকরা এসে সিনিয়র-জুনিয়র অনুযায়ী বসার নির্দেশনা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এসময় একে অন্যকে অশ্লীলভাবে গালিগালাজ করতেও দেখা যায়। একপর্যায়ে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা তাদের নিবৃত্ত করলেও অনুষ্ঠান আর একসঙ্গে শেষ হয়নি। পরবর্তীকালে দুই পক্ষই দলীয় কার্যালয়ে পৃথকভাবে কেক কাটার মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষ করলেও আলোচনা সভা আর অনুষ্ঠিত হয়নি।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না আরা মিলি বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। নিজেদের মধ্যে এমন ঘটনা আসলেই বলতে ভালো লাগে না। তিনি দাবি করে বলেন, আমার মেয়েরা আগে গিয়ে দলীয় কার্যালয়ে বসেছিল। সভাপতি এসে তাদের তুলে দেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি উত্তেজিত হয়ে যান এবং ওখানে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।তবে পরবর্তীতে জ্যোৎস্না আরা মিলি হাতাহাতির ঘটনা অস্বীকার করেন। র্যালি, শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ একসঙ্গে করার পর মতের মিল না হওয়ায় আলাদা কেক কেটেছি।
আর সভাপতি লাইজু জামান বলেন, তেমন বড় কিছু ঘটেনি। বড় কর্মসূচিতে একটু ঠেলাঠেলি হতেই পারে। এটি নিউজ করার কোনো বিষয় নয়। নিজেদের মধ্যে একটু ঝামেলা হলেও পরবর্তীতে সব ঠিক হয়ে গেছে।